এমন কিছুই নেই যা শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা যায় না। সব যায়। কিন্তু আমাদের দেশের লেখকগণ কেমন জানি শিশুদের নিয়ে লিখতে সাচ্ছন্দ বোধ করেন না। তারা শুধু বড়দের নিয়ে লিখেন। কারনটা আর কিছু নয়। বড়দের নিয়ে যা তা লেখা যায় কিন্তু ছোটদের নিয়ে? একটু হিসেব করেই লিখতে হয় আর কি। ভাষা ব্যবহার কিংবা ব্যাখ্যা উপস্থাপনের উপর সতর্কতা রাখতে হয়। শিশুদের জন্য লেখার ভাষা এমন হতে হয় যেন, শিশু তার কল্পনার জগৎ থেকে অনুধাবন খুব সহজেই করতে পারে। অনেক লেখক আছেন যারা কোন বিষয়কে সহজভাবে উপস্থাপনই করতে পারেন না বরং সহজ বিষয়কে জটিল করে তোলেন। এছাড়া আরো অনেক কারনে আমরা ছোটদের লেখাগুলো কম পাই। এছাড়া ছোটদের লেখা বলতে আমাদের দেশের লেখকগণ বোঝেন হাসি ঠাট্টা তামাশ আর রূপকথার গল্প। ভূতের গল্প, রাক্ষসের গল্প তো আছেই। কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে বিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন এমনকি রাজনীতিও পর্যন্ত শিশুদের উপযোগী করে লেখা যায়। সুতরাং শিশু-কিশোরদের সাহিত্যের উপরেই বেশি জোর দেওয়া উচিত আমাদের দেশের লেখকদের। ছোট বেলা থেকেই যদি খুব সাবলীল ও সুন্দর ভাষায় দেশের ইতিহাস, অর্থনীতি, রাজনীতি, বিজ্ঞান, সাহিত্য ইত্যাদি শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা হয় এবং শেখান হয় তবে ভবিষ্যতের জন্য পথনির্দেশনা দেওয়া সহজ হয়।
এই সকল বিষয়গুলোকে লক্ষ্য রেখেই ‘আলোকিত পাঠশালার’ যাত্রা শুরু। এই সাইট থেকে শিশু-কিশোররা শিখতে পারবে খুব সাবলীল ও সহজ ভাষায় সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন, রাজনীতি, আইন ইত্যাদি। আমি বিশ্বাস করি শিক্ষার কোন বয়স নেই। যেহেতু ছোট কালেই মস্তিষ্ক বেশি সুগঠিত থাকে তাই সবচেয়ে বেশি জানা প্রয়োজন শিশু-কিশোর বয়সেই। শুধু একটু সহজ ভাবে কোন বিষয় শিশু-কিশোরদের বুঝিয়ে বললেই তারা বুঝতে পারবে সেটা দর্শনই হোক কিংবা বিজ্ঞান হোক। আর এটাই আমার প্রয়াস।
এখনও আমাদের দেশের অবিভাবকরা মনে করেন যে কম্পিউটারে শিক্ষা গ্রহন তাদের সন্তানদের বিপথে নিয়ে যাবে। তারা খারাপ কিছু শিখবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এ ধারনা ভুল। একজন অবিভাবক যেমন তাদের সন্তানদের খারাপ সমাজ ও পরিবেশ থেকে আগলে রাখে তেমনি কম্পিউটারেও তাদের আগলে রাখা যাবে। কম্পিউটার তথা ইন্টারনেট জ্ঞান অর্জনের একটি উত্তম মাধ্যম। যদি একজন অবিভাবক তার সন্তানকে ইন্টারনেটের ভাল দিকগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় তবে সন্তান ভাল দিকেই পরিচালিত হবে।
শেষ কথা: বাংলা ভাষায় শিশু-কিশোরদের নিয়ে ভালো পূর্ণাঙ্গ কোন ওয়েব সাইট বা তথ্যশালা নেই। আমি আশাকরি আজ কিংবা অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ তথা বাংলা ভাষাভাষী অবিভাবকরা তাদের সন্তানদের শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে এই সাইটটির গুরত্ব অনুধাবন করতে পারবেন। আর তখনই এই সাইটটি শিশু-কিশোরদের ভবিষ্যতের জন্য পথনির্দেশকের ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে আমি মনে করি।
ধন্যবাদ-
শিশির শুভ্র
পরিচালক: আলোকিত পাঠশালা
0 comments:
Post a Comment