মা পায়ের কাছে একটা পুরোনো সুটকেশ নিয়ে বসে রয়েছেন। ছেলেকে দেখেই লাফিয়ে উঠলেন, ‘তুই আমাকে একটা বৃদ্ধাবাসে রেখে আয়, আমি আর তোর বাসায় থাকবো না।’
ব্যাপার আজ গুরুতর। অনেক চেষ্টার পর মায়ের কাছ থেকে তরুণটি জানতে পারল, বউ মায়ের কাঁচের ফুলদানি ভেঙে দিয়েছে। মা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘তিরিশ বছরের পুরোনো বিলিতি ফুলদানী, আমার বিয়েতে রাঙামামা উপহার দিয়েছিলেন।’
কিন্তু ফুলদানী ভাঙল কী করে? অনেক চেষ্টা করে যুবকটি জানতে পারলেন বউয়ের খুব একটা দোষ নেই। শাশুড়ী ঠাকরুণ উত্তেজনার মাথায় বউমাকে ফুলদানীটা ছুঁড়ে মেরেছিলেন। তরুনী নববধূ মোক্ষম মুহুর্তে লাফ দিয়ে সরে যাওয়ায় ফুলদানীটা তার গায়ে না লেগে দেওয়ালে লেগে ভেঙে যায়।
ফুলদানী ভাঙার অল্প কিছুদিন পরেই শাশুড়ী ঠাকুরানির মনোবাসনা পূর্ণ হতে চলেছিল।
একদিন দুপুরবেলা, তখন ছেলে অফিসে, কোথাকার এক বৃদ্ধাবাস থেকে উদ্যোক্তারা পাড়ার
মধ্যে বাড়িতে বাড়িতে ঘুরছিল আশ্রমের জন্য জিনিসপত্র, রসদ সংগ্রহ করার জন্য।
বাসায় কড়া নাড়তে দরজা খুলে সংগ্রাহকদের কথা শোনার পর ভিতরের ঘরে গিয়ে বউমা ঘুমন্ত শাশুড়িকে টেনে নিয়ে আসেন বৃদ্ধাবাসে দান করবেন বলে। সেদিন নাকি বহু কষ্টে পরিত্রাণ পেয়েছিলেন শাশুড়ি ঠাকুরণ।
অতঃপর ... অনুনয়ের কন্ঠে স্বামী বেচারা বলে, ‘দ্যাখো, আমাদের বাড়ির ওই কুকুর বেড়াল, ভুলো আর হুলো ওরা দু’জন দু’জগতের জানোয়ার হয়েও কেমন মিলেমিশে সহাবস্থান করছে, তুমি আর মা দু’জনে কি সে ভাবে থাকতে পারো না?’
বউ বলল, ‘তুমি বেড়ালের লেজটা কুকুরের লেজের সঙ্গে গিঁট বেঁধে দাও, তারপর দ্যাখো ভুলো আর হুলো কেমন সহাবস্থান করে?’
[রম্যরচনা ৩৬৫ – তারাপদ রায়]
লেখাটি পাঠিয়েছেন: সুমন দাস
ABOUTME
শিশু কিশোররাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। তাদের জন্য কিছু রেখে যেতে হবে এটাই আমার কর্তব্য। আর এই কর্তব্যজ্ঞান থেকেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। বাংলা ভাষা শিশুদের অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষার সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য ইন্টারনেট ছাড়া কোন পথ নেই। আমি চেষ্টা করেছি শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষার জন্য একটি উন্নত অনলাইন ভিত্তিক তথ্যভান্ডরের অবকাঠামো তৈরী করার। যদি আমার এই প্রচেষ্টা থেকে বাংলাদেশের একটি শিশুও উপকৃত হয় তবে আমার কর্ম স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করব।
0 comments:
Post a Comment