স্বাগতম

শিশু-কিশোরদের জগতে

ক্লাসের পড়া

বয়স ভিত্তিক পড়া

বিজ্ঞান পড়া

যেমন খুশি তেমন পড়া

ইংরেজি শেখা

বীর রাজার গল্প- কানিজ ফাতিমা

এক দেশে ছিল এক বীর রাজা৷ তার ছিল অনেক শক্তি৷ কেউ তাকে যুদ্ধে হারাতে পারত না৷ তার চারপাশের দেশের রাজারা পড়ল মহা চিন্তায়… কোনদিন না সে আবার তাদের দেশ নিয়ে নেয়৷ তাই তারা অনেক ভেবে চিনতে একটা উপায় বের করলো ৷ তারা ঢোল পিটিয়ে পুরস্কার ঘোষণা করলো – যে এই বীর রাজাকে যুদ্ধে হারাতে পারবে তাকে দেয়া হবে অর্ধেক রাজত্ব (আর রাজকন্যা যদি রাজী হয় তবে রাজকন্যার সঙ্গে বিয়ে  )৷ কিন্তু কেউই সাহস করলো না বীর রাজার সঙ্গে যুদ্ধ করতে- কারণ যুদ্ধে গেলেই নিশ্চিত মৃত্যু৷ রাজারা সব হতাশ, কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না বীর রাজার সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য৷ একদিন এক রাধুনী এলো রাজার দরবারে- বলল, “আমি বীর রাজাকে হারাব৷” সবাই তো অবাক! যেখানে বীর সেনাপতিরা ভয় পায় সেখানে এক রাধুনী হারাবে বীর রাজাকে- এ টা কি করে সম্ভব ? রাধুনী বলল, ” আমকে বিশ্বাস করুন মহারাজ, আমিই পারব বীর রাজাকে হারাতে৷ আমার উপর ভরসা রাখতে পারেন৷” রাজা বললেন,” ঠিক আছে, তুমি যখন এত করে বলছ তখন একবার চেষ্টা করেই দেখো” ৷

রাধুনী বীর রাজার দেশে গেল ৷ সেখানে রাজার দরবারে গিয়ে বলল, ” হুজুর, আমায় আপনার রান্নার দায়িত্ব দিন, আমি অনেক মজার মজার রান্না জানি৷ আপনি এমন মজার রান্না জীবনেও খাননি ৷ ” উমমম ….. বীর রাজার তো শুনে জিভে পানি চলে এলো ৷ সে বলল, “ঠিক আছে, এখনি তুমি কাজে লেগে যাও৷ ” রাধুনী রাজার জন্য দিন রাত মজার মজার সব খাবার বানাতে শুরু করলো - খাটি ঘী এর পোলাও, গরুর কাচ্চি বিরিয়ানী, খাসীর রেজালা, হরেক রকম মিষ্টি , চকলেট কেক, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, রং বেরঙের ড্রিঙ্কস, বীফ বার্গার …আরো কত কি ৷ 

রাজা শাক সব্জী খাওয়া ছেড়ে দিল৷ পানির বদলে সব মজার মজার ড্রিঙ্কস খেতে শুরু করলো ৷ ধীরে ধীরে রাজার ভুরি বেড়ে গেল, চর্বি বেড়ে গেল, কোলেস্টরল বেড়ে গেল, ডায়াবেটিস হলো৷ ডাক্তার বলল, “মহারাজ আপনি বেশী করে সব্জী খান, আর এসব খাবার ছেড়ে দিন৷” কিন্তু রাধুনী প্রতি বেলাতেই মজার মজার খাবার বানিয়েই চলল-খাঁটি ঘী এর পোলাও, গরুর কাচ্চি বিরিয়ানী, খাসীর রেজালা, হরেক রকম মিষ্টি, চকলেট কেক, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বীফ বার্গার, রং বেরঙের ড্রিঙ্কস, বীফ বার্গার ….আরো কত কি ৷ রাজা খাবার টেবিলে এসব খাবার দেখে বলল, ” ডাক্তার আমাকে এসব খেতে বারণ করেছে৷” রাধুনি বলল, ” রাজা আমি আপনাকে অনেক ভালবাসি, তাই কষ্ট করে এসব মজার খাবার আপনার জন্য রান্না করি ৷ আপনি না খেলে তো আমার কষ্টই বৃথা৷” রাজা ভাবে- তাইত, বেচারা এত কষ্ট করে আমার জন্য, আমাকে এত ভালবাসে, আমি এগুলো না খেলে সে মনে কষ্ট পাবে৷ তাই রাজা এখবর গুলো খায় ৷
ক’মাস পরে রাজার বুকে অনেক ব্যথা হলো৷ তাড়াতাড়ি ডাক্তার ডাকা হলো৷ ডাক্তার বলল, ” মহারাজ আপনার হার্টে অসুখ হয়েছে , আপনি বেশী করে সব্জী খান আর এসব খাবার ছেড়ে দিন৷ কিন্তু রাধুনী মজার খাবার বানিয়েই চলল-খাটি ঘী এর পোলাও, গরুর কাচ্চি বিরিয়ানী, খাসীর রেজালা, হরেক রকম মিষ্টি, চকলেট কেক, ফ্রেন্চ ফ্রাই, রং বেরঙের ড্রিঙ্কস,বীফ বার্গার …আরো কত কি৷ রাজা খাবার টেবিলে এসব খাবার দেখে বলল, “ডাক্তার আমাকে এসব খেতে বারণ করেছে৷ ” রাধুনি বলল, “রাজা আজ মেহমান এসেছে, মেহমানদের সাথে একদিন খেলে কিচ্ছু হবে না৷ ” রাজা ভাবলো, তাইত,একদিন খেলে কিচ্ছু হবে না৷ রাধুনী মজার খাবার বানিয়েই চলল-খাটি ঘী এর পোলাও, গরুর কাচ্চি বিরিয়ানী, খাসীর রেজালা, হরেক রকম মিষ্টি, চকলেট কেক, ফ্রেন্চ ফ্রাই,রং বেরঙের ড্রিঙ্কস, বীফ বার্গার …আরো কত কি ৷রাজা খাবার টেবিলে এসব খাবার দেখে বলল,”ডাক্তার আমাকে এসব খেতে বারণ করেছে”৷ রাধুনি বলল, ” মহারাজ, আজ একটা খুশীর দিন; আজ খেলে কিচ্ছু হবে না৷” এভাবে যখনি রাজা বলত ডাক্তার আমাকে এসব খেতে বারণ করেছে, রাধুনী কোনো না কোনো কারণ দেখিয়ে বলত মাত্র একদিন খেলে কিচ্ছু হবে না৷ এভাবে রাধুনী মজার খাবার বানিয়েই চলল- খাটি ঘী এর পোলাও, গরুর কাচ্চি বিরিয়ানী, খাসীর রেজালা, হরেক রকম মিষ্টি, চকলেট কেক, ফ্রেন্চ ফ্রাই, রং বেরঙের ড্রিঙ্কস, বীফ বার্গার …আরো কত কি ৷ আর রাজা খেয়েই চলল৷ কিছুদিন পরে রাজার আবার প্রচন্ড বুকে ব্যথা হলো৷ ডাক্তার এলো, ডাক্তার অনেক চেষ্টা করলো; কিন্তু কিছুতেই আর কিছু হলো না৷ রাজা অবশেষে মারা গেল৷ 
আর রাধুনী দৌড়ে গেল পাশের দেশের রাজার দরবারে তার পুরস্কার আনতে৷ কারণ, সে বীর রাজাকে যুদ্ধ ছাড়াই মেরে ফেলতে পেরেছে ৷ 

উপদেশ: শুধু ভাল ভাল খাবার খেলেই স্বাস্থবান হ্ওয়া যায় না। তোমরাতো দেখলে কিভাবে বীর রাজা অস্বাস্থকর খাবার খেয়ে মারা গেল। তোমরাও আজ থেকে আমিয়ের পাশাপাশি বেশি বেশি সবজি খাও। তাহলে তোমরা বলবান হবে আর কেউ তোমাদের হারাতে পারবে না।

[লেখাটি পাঠিয়েছেন: গোলাম মওলা আকাশ]

Share this:

ABOUTME

শিশু কিশোররাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। তাদের জন্য কিছু রেখে যেতে হবে এটাই আমার কর্তব্য। আর এই কর্তব্যজ্ঞান থেকেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। বাংলা ভাষা শিশুদের অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষার সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য ইন্টারনেট ছাড়া কোন পথ নেই। আমি চেষ্টা করেছি শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষার জন্য একটি উন্নত অনলাইন ভিত্তিক তথ্যভান্ডরের অবকাঠামো তৈরী করার। যদি আমার এই প্রচেষ্টা থেকে বাংলাদেশের একটি শিশুও উপকৃত হয় তবে আমার কর্ম স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করব।

JOIN CONVERSATION

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment