স্বাগতম

শিশু-কিশোরদের জগতে

ক্লাসের পড়া

বয়স ভিত্তিক পড়া

বিজ্ঞান পড়া

যেমন খুশি তেমন পড়া

ইংরেজি শেখা

সড়া অন্ধা অছি

মহারাজের রাজসভায় বহু জ্ঞানী গুনী লোক আসতেন। মহারাজা ছিলেন অতি সজ্জন আর তাঁর প্রাণও ছিল কোমল। কত জন প্রায়শঃই তাঁর কাছে কত কাজে উপস্থিত হত তার ইয়ত্তা ছিল না। একবার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভায় এরকম নূতন একনজ লোক এসে হাজির চাকরী করার জন্য। লোকটির কথা যেমন মধুন, আচরণও নিখুঁত। অচিরে সকল সভাসদের দৃষ্টি আকর্ষন করলে সে, রাজাও তার প্রতি সন্তুষ্ট হলেন। রাজার সম্মতি পেয়ে সে মাঝে মাঝে রাজসভায় আসত। লোকটিও গুনের-হেন কাজ নাই সে করতে পারত না, হেন বিদ্যা নাই সে জানত না, হেন বিষয় নাই সে বলতে পারত না। লোকটির চেহারাও ছিল সুন্দর, চেহারা দেখে কিছুতেই ঠাহর করা যেত না- লোকটি বাঙালী, পাঞ্জাবী, মাদ্রাজী অথবা উড়িষ্যা । এসব কোনটি ও তার চেহারায় বোঝা যেত না। শুধু তাই নয়, লোকটি নানা ভাষায় বেশ ভালভাবেই কথা বলতে পারত। নানা ভাষায় চিঠি পত্রাদিও লিখতে পারত। কোনটা যে তার আসল মাতৃভাষা কারো পক্ষেই তা ধরার কোন ‍উপায় ছিল না, কারণ সব ভাষাতেই সে সমান দক্ষ। কেউ কোন ভাষায় তাকে হার মানাতে পারতে না।

মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র গোপালকে একদিন কৌতূহলের বশে একান্তে ডেকে বললেন, গোপাল তুমি যদি এই লোকটির প্রকৃত মাতৃভাষা কি এবং লোকটি কি জাতের বলতে পার, তবে আমি তোমাকে প্রচুর পুরষ্কার দেব। না পারলে কিন্তু তোমাকে বিশ ঘা বেত খেতে হবে। বল, পারবে কি না। যদি পার চেষ্টা করে দেখ।

গোপাল মাথা চুলকে বললে, এর জন্য আর ভাবনা কি? কয়েকদিনের মধ্যেই আমি লোকটির আসল পরিচয় বের করে দিচ্ছি। তোমাকে বেত মারার প্রয়োজন হবে না, তবে পুরষ্কারের অঙ্কটা বেশি করতে হবে একটু। একদিন পরেই ওই লোকটির রাজসভায় আসার কথা। গোপাল লোকটির আসার পর রাজসভার দরজার পাশে লুকিয়ে রইল। সে যেই রাজসভা থেকে বেরিয়ে বাইরে যাবে- গোপাল ও অমনি রাজসভার মধ্যে ঢুকবার ভান করে লোকটাকে ভীষণ জোরে ধাক্কা দিল।

লোকটি আচমকা ধাক্কা খেয়ে টাল সামলাতে না পেরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গিয়ে বললে, সড়া অন্ধা অছি। দিনর বেলারই আখির মথা খাউচি?

গোপাল মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকে মুচকি হেসে বললে, মহারাজ লোকটা উড়ে-আচমকা ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাওয়ার ফলে ওর মুখ দিয়ে মাতৃভাষা বেরিয়ে পড়েছে। আমার কথা যদি মিথ্যে হয় ওকেই জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারেন। উনি সজ্জন ব্যক্তি। এ লোক কখনও মিথ্যে বলবে না। ভদ্রলোকও সত্যি কথাই বললেন।

রাজসভায় সকলেই গোপালের বুদ্ধির প্রশংসা করলে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র খুশি হয়ে গোপালকে ভাল পুরষ্কার দিলেন গোপালের বুদ্ধির বাহাদুরির প্রশংসা জানিয়ে।

Share this:

ABOUTME

শিশু কিশোররাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। তাদের জন্য কিছু রেখে যেতে হবে এটাই আমার কর্তব্য। আর এই কর্তব্যজ্ঞান থেকেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। বাংলা ভাষা শিশুদের অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষার সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য ইন্টারনেট ছাড়া কোন পথ নেই। আমি চেষ্টা করেছি শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষার জন্য একটি উন্নত অনলাইন ভিত্তিক তথ্যভান্ডরের অবকাঠামো তৈরী করার। যদি আমার এই প্রচেষ্টা থেকে বাংলাদেশের একটি শিশুও উপকৃত হয় তবে আমার কর্ম স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করব।

JOIN CONVERSATION

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment