কার কথা কে শোনে! একটু পরেই সত্য হলো মমতার কথা। হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল কমল। ওর ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে চোট লেগেছে। রক্ত ঝরছে। কেঁদে উঠল সে। বিদ্যালয়ে পৌছতে দেরি হয়ে যাবে বলে সহপাঠীরা কমলকে ছেড়ে চলে গেল। কিন্তু মমতা তা করল না। সে কমলকে বলল, ছিঃ কেঁদো না। আমি দেখছি।’ মমতার স্কুলব্যাগে তার মা সবসময় ডেটল, তুলা, ব্যান্ডেজ এসব দিয়ে রাখেন। কখন দরকার হয় বলা তো যায় না! এখন দরকার পড়ল। মমতার নিজের জন্যে নয়। কমলের জন্য।
মমতা কমলের চোট লাগা বুড়ো আঙুলে ঔষধ লাগাল। তারপর যত্ন করে বেঁধে দিল।
কমলকে ধরে ওঠালো মমতা। তারপর মমতা ওর স্কুলব্যাগ নিল। কমল মমতাকে ধরে-ধরে পায়ের গোড়ালির উপরভর দিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে স্কুলে গেল।
স্কুলে গিয়ে মমতা আগে কমলকে তার শ্রেণিকক্ষে পৌছে দিল। কমলদের ক্লাসের শিক্ষক মমতার সব কথা শুনলেন। তিনি খুব খুশি হলেন।
ওদিকে মমতাদের শ্রেণিকক্ষের শিক্ষক দেরি করে শ্রেণিকক্ষে আসার জন্য খুব রাগ করলেন বললেন,“ক্লাসে আসতে দেরি হলো কেন?”
মমতা সব খুলে বলল। শিক্ষক খুবই খুশি হলেন।
তখন তিনি ক্লাসের সবাইকে বললেন, “জানো, আজ মমতা কমলের জন্য যা করল, তাকে কী বলে?’
শিক্ষার্থীররা: কী বলে স্যার?
শিক্ষক: একে বলে সহমর্মিতা।
ঠিক তাই।
সহমর্মিতা বলতে বোঝায় অপরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনাকে নিজের বলে মনে করা। কমলের সহাপাঠীরা সকলের দুঃখকে নিজেদের দুঃখ বলে মনে করে নি। কিন্তু মমতা কমলের দুঃখকে নিজের দুঃখ বলে মনে করেছে।
আমরা পাড়ায়, গ্রামে সবাই মিলেমিশে বাস করি। সেখানে সুখে-দুঃখে সকলকে একসঙ্গে থাকতে হয়। একসঙ্গে চলতে হয়। একেই বলে সমাজ। সমাজে পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে হয়। তাহলে পরস্পরের মধ্যে প্রীতির সম্পর্ক স্থাপিত হয়। সমাজে শান্তি বিরাজ করে।
তাই সমাজের সহর্মিতা খুবই দরকারি বিষয়।
সহমর্মিতা প্রকাশের ক্ষেত্রে কোন জাতি বা ধর্ম বিচার করতে নেই। সকল জাতির ও সকল ধর্মের মানুষের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে হয়। সুতরাং বিভিন্ন ধর্মালম্বী মানুষের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ABOUTME
শিশু কিশোররাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। তাদের জন্য কিছু রেখে যেতে হবে এটাই আমার কর্তব্য। আর এই কর্তব্যজ্ঞান থেকেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। বাংলা ভাষা শিশুদের অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষার সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য ইন্টারনেট ছাড়া কোন পথ নেই। আমি চেষ্টা করেছি শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষার জন্য একটি উন্নত অনলাইন ভিত্তিক তথ্যভান্ডরের অবকাঠামো তৈরী করার। যদি আমার এই প্রচেষ্টা থেকে বাংলাদেশের একটি শিশুও উপকৃত হয় তবে আমার কর্ম স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করব।
0 comments:
Post a Comment