ডাক্তারবাবু রোগী চেনেন না, এই প্রথম দেখছেন তাকে। সুতরাং যা-যা করার সবই করলেন।
নাড়ি টিপলেন, জিব দেখলেন, বুকে স্টেথষ্কোপ যন্ত্র লাগিয়ে মনোযোগ দিয়ে অন্তর্নিহিত আওয়াজ শুনলেন।...
কিন্তু ডাক্তারবাবু খারাপ কিছুই পেলেন না।
অতঃপর চিন্তিত ডাক্তারবাবু রোগীকে জিজ্ঞাসা করলেন, “...কী শরীর খারাপ লাগে আপনার?”
শুকনো মুখে, করুণ কণ্ঠে রোগী বললেন, “কী বলব ডাক্তারবাবু। মনে কোনও আনন্দ পাই না। সুখ নেই। সবসময় কেমন মন খারাপ, বিষণ্ণতা। কিছু ভাল লাগে না। মাথা সবসময় টিন টিন করে। শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে। কোনও কাজে আনন্দ পাই না।”
...রোগীর স্বাস্থ্য যেমন মারাত্মক, গলার স্বরও তেমন মারাত্মক। সেই মারাত্মক গলায় যথাসম্ভব খ্যান খ্যান করতে করতে রোগী তখনও বলে চলেছেন, “... কতকাল ভাল করে হাসিনি।”
...ডাক্তারবাবু রোগীকে বললেন, “একটা ভাল পরামর্শ দিচ্ছি। ...আচ্ছা আপনি তারাপদ রায়ের নাম জানেন?”
রোগী বিষন্ন চোখে তাঁর গোলমেলে কণ্ঠকে যতটা অস্ফুট করা যায় তাই করে সংক্ষপ্ত উত্তর দিলেন, “তা জানি।”
“আপনি তারাপদ রায়ের লেখা পড়ুন, তারাপুবাবুর লেখা কান্ডজ্ঞান, জ্ঞানগম্যি এইসব পড়ুন।... তারাপদ রায়ের রচনা পড়ে আপনার মনে আনন্দ, মুখে হাসি, জীবনে ফুর্তি সব ফিরে আসবে।”
ম্লানতম কন্ঠে, বিষন্নতম মুখে স্থূলদেহ ঘর্মাক্ত কলেবর রোগী বললেন, “ডাক্তারবাবু। আমিই তারাপদ রায়।”
[রম্যরচনা ৩৬৫ – তারাপদ রায়]
লেখাটি পাঠিয়েছেন: সুমন দাস
ABOUTME
শিশু কিশোররাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। তাদের জন্য কিছু রেখে যেতে হবে এটাই আমার কর্তব্য। আর এই কর্তব্যজ্ঞান থেকেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। বাংলা ভাষা শিশুদের অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষার সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য ইন্টারনেট ছাড়া কোন পথ নেই। আমি চেষ্টা করেছি শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষার জন্য একটি উন্নত অনলাইন ভিত্তিক তথ্যভান্ডরের অবকাঠামো তৈরী করার। যদি আমার এই প্রচেষ্টা থেকে বাংলাদেশের একটি শিশুও উপকৃত হয় তবে আমার কর্ম স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করব।
0 comments:
Post a Comment